ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

জমি সংক্রান্ত বিরোধ

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাঁওতাল নারীকে মারধর-বাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগ 

  প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৫

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাঁওতাল নারীকে মারধর-বাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগ 
গাইবান্ধায় ফিলোমিনা হাসদা নামে এক সাঁওতাল নারীর বাড়িতে আগুন দেয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাঁওতাল নারীকে মারধর ও তার বাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোবিন্দগঞ্জের রাজাবিরাট এলাকায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।

মারধরের শিকার ওই নারীর নাম ফিলোমিনা হাসদা (৫৫)। তিনি বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

ফিলোমিনা হাসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন বলেন, গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে গ্রামের পাশে সাঁওতালদের পৈত্রিক জমি, যা বাঙালিরা দখল করে নিয়েছে, সেই জমিতে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মাটি ভরাট করছিলেন। জায়গাটি আগে পতিত অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করে চেয়ারম্যান সেই জমিতে মাটি ভরাট করছেন দেখে গ্রামের কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দিতে যায়। তখন চেয়ারম্যানের সামনেই তার লোকজন আমার খালাতো ভাই নিকোলাস মুর্মুকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। আমরা কিছু দূরে আলুর খেতে কাজ করছিলাম। খালাতো ভাইকে মারধরের কথা শুনে আমি প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে আসেন। এসময় আমার মা চেয়ারম্যানের লাঠি ধরতে গেলে চেয়ারম্যান তার কানে উপর্যুপরি থাপ্পড় দেন। এতে মা মাটিতে পরে যান এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে।

তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাইয়েরা মাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে দুপুর ১২টার দিকে আমি আবার আলুর খেতে গেলে চেয়ারম্যানের অনুসারী ২০-২৫ জন লোক আমাকে বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে এবং হুমকি দিয়ে চলে যায়।

ব্রিটিশ সরেন আরও বলেন, বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মাকে রেফার্ড করলে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। মা এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন। রাত ১১টার দিকে শুনি চেয়ারম্যানের লোকজন আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তবে একটি ঘর পুড়ে গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০-১২ বছর আগে স্থানীয় এক বাঙালি মালিকের কাছ থেকে ১৬ শতক জমি কিনেছিলাম। সেই জমিতে মাটি ভরাট করতে গেলে ব্রিটিশ সরেনসহ কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দেয়। আমার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেয়। আমার কাছে জমির দলিল আছে। জমিও আমার নাম রেকর্ড হয়েছে। আমি ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর করিনি।

ফিলোমিনা হাসদার বাড়িতে আগুন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের বাড়িতে কারা আগুন দিয়েছে আমি জানি না। সেসময় আমি থানায় ছিলাম। তবে স্থানীয় দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকালে চেয়ারম্যান নিজে সাঁওতালদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি এবং ফিলোমিনা হাসদাকে মারধর করেন।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করতে একজন অফিসারকে সেখানে পাঠিয়েছি। শুনেছি জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। একজন সাঁওতাল নারীকে কানে থাপ্পড় দিয়েছেন (চেয়ারম্যান)। আর রাতে বাড়িতে কে আগুন দিয়েছে সেটা কেউ দেখেনি। আমার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত